মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

চাচা কাহিনী (বিটলামীর একটা সীমা থাকা উচিত :) )

Leave a Comment
আজ আপনাদের সামনে চাচা কাহিনী তুলে ধরব। এই চাচা কাহিনী সৈয়দ মুজতবা আলীর সেই “চাচা কাহিনী” নয়। এটা আমার চাচার কাহিনী।
আমার এই চাচা ছিলেন বিটলামিতে অতুলনীয়। পিচ্চি থেকে বুড়া কাওকেই রেহাই দিতেন না। মাথায় সবসময় শয়তানী চিন্তা কাকে কিভাবে শায়েস্তা করা যায়। চাচার বিটলামীর টপ লিস্ট থেকে কয়েকটা আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।

এক
চাচা তখন রাবির ছাত্র। নামাজ কালামের ধারে কাছে যেতেন না। এনিয়ে দাদী খুব চিন্তিত । কি করা যায়? তখন তিনি প্রায় জোর করেই তাবলীগে পাঠালেন ছেলেকে। যা হোক চাচা শান্ত ছেলের মতই গেলেন। নামাজ কালাম ও ধর্ম বিষয়ক অনেক কথা বার্তা ইতিমধ্যে শিখে ফেলেছেন। তারপর ফ্রিতে খাওয়া থাকা, বেশ ভালই দিন চলে যাচ্ছিল তার। মাঝে মধ্যে যে শয়তানী চিন্তা ভাবনা মাথাতে আসছে না তা নয়। একদিন খেয়াল করলেন খাবার সময় বড় হুজুর থাকেন না। তার খাবার আলাদা ভাবে দেওয়া হয়। আপনারা জানেন তাবলীগে সবাই একটা বড় প্লেটে গোল হয়ে বসে খায়। চাচা সুযোগ বুঝে একসময় হুজুরের খাবার চেক করে দেখলেন। হ্যাঁ, অনুমান সত্যি, মুরগীর বড় বড় দুইটা ঠ্যাং সহ আরও অনেক গোস্ত রাখা হয়েছে। চাচা তখন মনে মনে ভাবলেন ‘এই ব্যপার! আপনি মুরগীর ঠ্যাং আর আমরা কচুর লতি, দেখাচ্ছি মজা।’ কিন্তু কিভাবে হুজুরকে শায়েস্তা করা যায় এ নিয়ে তিনি বেশ চিন্তিত, এ সময় মনে পড়ল হুজুরের সেন্ডেলের কথা। হুজুরের সেন্ডেল জোড়া বেশ দামী এবং নতুন। তিনি সেগুলো মেরে দিলেন। যথারীতি বিক্রি করে পুরদস্তুর নাস্তা করলেন। ফিরে এসে দেখলেন হুজুর বেজার মুখে বসে আছে। কি হয়েছে বলতেই হুজুর তার সেন্ডেল বিলাপ শুরু করে দিলেন, চাচাও তার সাথে শামিল হলেন এবং হুজুরের সেন্ডেল হারানোর ব্যপারে গভীর সমবেদনা জ্ঞ্যাপন করলেন এবং প্রস্তাব দিলেন “হুজুর আগামী ওয়াক্তে পাশের মসজিদ থেকে কি একজোড়া আপনার জন্য চুরি করে নিয়ে আসব?” হুজুর কড়া কথা বলতে গিয়ে থেমে গেলেন, শেষমেশ বলেই ‘ফেললেন যাও নিয়া আস।’ চাচা মনে মনে ভাবলেন ব্যটাই টোপ গিলছে। যাক হুজুরের হুকুম মত পাশের মসজিদ হতে সবচেয়ে দামী ও নতুন সেন্ডেল জোড়া চুরি করে এনে হুজুরের সম্মুখে হাজির করলেন। হুজুরতো বেসম্ভব খুশি! এ যে তার খোয়া যাওয়া সেন্ডেলের চেয়ে দামী ব্র্যান্ডের। কাহিনী কিন্তু শেষ হয় নাই টুইস্ট কিন্তু বাকি আছে। পরদিন চাচা কি চাচা সেই মসজিদে গিয়ে খতিবকে ‘গতরাতে আপনাদের এখান থেকে কি কোন স্যান্ডেল চুরি হয়েছে’ বলতেই তিনি বললেন ‘হ্যাঁ হ্যাঁ, নতুন একজোড়া স্যান্ডেল চুরি হয়েছে, চেয়ারম্যান সাহেবের।’ চাচা মনে মনে ভাবলেন পড়বি তো পড় মালীর ঘাড়েই! চাচা বললেন, ‘আপনি কি স্যান্ডেল চোর ধরতে চান? তাহলে আজ আপনাদের এখানে তাবলীগের যে দলটা আসবে তার হুজুরের পায়ে দেখবেন সেই স্যান্ডেল।’ তারপর চাচা তাবলীগে না গিয়ে সোজা বাড়ি চলে আসলেন। পরের ঘটনা আর নাই বললাম। হুজুরের মুরগী খাবার ইচ্ছা অন্তত আর হবেনা।

দুই
আপনারা জানেন আমার বাড়ি রাজশাহী। ব্যপার সেটা না ব্যপার হল আম। আম কুড়ানোর যে কি মজা যে এই কাজ না করেছে তাকে বলে বোঝানো যাবেনা। চাচা প্রতিদিন খুব ভোঁরে ঘুম থেকে উঠে ছোট্ট একটা টর্চ নিয়ে আম কুঁড়াতে যেতেন। আমও পেতেন বেশ! সব কিছুই রুটিন মাফিক হচ্ছিল। কিন্তু একদিন বাগানে গিয়ে কোন আম পেলেন না। তার মনে হল কার এত বড় সাহস! আমার আগে এভাবে আম কুঁড়িয়ে নেয়। সকাল বেলা জানতে পারলেন পাশের বাড়ির দুই ফুপু এই কাজ করেছে। এবার যাবে কোথায় পড়েছ মোগলের হাতে খানা খেতে হবে সাথে। পরদিন শেষ রাতের দিকে চাচা একটা লম্বা সাদা চাঁদর নিয়ে বাগানে চলে গেলেন। কিছুক্ষণ পর দেখলেন ফুপুরা আসছে। ব্যাস তিনি চাদরটি দিয়ে মুখ ঢেকে দুইহাত উঁচু করে তাদের সামনে দাঁড়িয়ে গেলেন। এরপর ফুপুরা তো দুরের কথা অন্য কেওই আর রাতের বেলা বাগানে যেত না।

তিন
এবারের ঘটনা শীতে। সে বার প্রচুর শীত পড়েছে। মাঘ মাস তার পরে হিম শ্বৈত্য প্রবাহ চলছে। এমন এক রাতে চাচা ও এলাকার এক বড় ভাই বসে গল্প করছে-
চাচাঃ দাউদ বেটা এবার খুব জাড়(শীত) পড়ছে তাই না?
দাউদঃ হ্যাঁ গো চাচা। কিন্তু আমাখে এত জাড় লাগে না।
চাচাঃ তাই! এখুন পারবি সাঁতার কাট্যা পুকুরের এ মাথা থাইকা ঐ মাথায় যাতে?
দাউদঃ কুনু ব্যপার! কি দিবা বুলো?
চাচাঃ দশটা ডিম খাওয়াবো।
দাউদঃ ঠিক আছে।
দাউদ ভাই নেংটি ঠুকে পুকুরে ঝাঁপ দিলেন আর চাচা আর এক দিক দিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে গেলেন।



আরো অনেক অনেক কাহিনী আছে পরে সময় পেলে শেয়ার করব।

সেই চাচা এখন কত সংসারিক। একটা উপজেলার ইউ এন ও পদে চাকরি করছেন। জীবনের অনেকটা বছর সেই চাচার হাত ধরে ঈদগাহে গেছি। কিন্তু এখন সবাই ব্যস্ত নিজ কর্মে। আপনাকে অনেক মিস করি চাচা। আপনি কি পারবেন না এবারের ঈদটা আমাদের সাথে করতে।
Read More...

মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট, ২০১৩

গল্প- বাসর রাত!

Leave a Comment
***
- সফিক, অ্যায় সফিফ।
- জী চাচাজান।
- ভাল করে সাবান দিয়ে ডলে গোসল করে আয় তো।
- জী আচ্ছা।
- কেন গোসল করতে বললাম শুনবি না? এখনকার ছেলেরা এমন কেন? সব কিছুতেই কেমন যেন একটা গা ছাড়া ভাব।
- কেন গোসল করব?
- তোর গায়ের যে অবস্থা, দেখে তো মনে হচ্ছে ডাস্টবিন থেকে উঠে এসেছিস। ক’দিন গোসল করিস না বলতে পারবি?
সফিক যে কি বলল তা শোনা গেল না কিন্তু কিছু বলল সেটা বুঝা গেল।
- আর, তোর দাঁড়ি গোঁফ এত বড় বড় কেন? সন্ন্যাসী হতে চাস নাকি? আমার বাড়িতে ও সব চলবে না। এই নে টাকা নিমাইয়ের দোকানে গিয়ে পরিষ্কার হয়ে আয়।
- আচ্ছা ঠিক আছে।
চাচার কথা কিছুই বুঝতে পারছে না সফিক। আজ চাচার কি হল! যে চাচা তাকে তিন বেলা গালি না দিয়ে খেতে বসেন না সেই তিনি আজ এমন আচরন করছে কেন? অবশ্য সে কখনও চাচার অবাধ্য কখনও হয়নি। প্রথমে বাবা তার কিছুদিন পর মা মারা গেলেন । তখন থেকেই সফিক এই চাচার কাছেই মানুষ। চাচা তাকে কটু কথা বললেও সে তার এই বজ্জাত চাচাটিকে অনেক ভালবাসে এবং তাকে যমের মত ভয় পায়। সফিক নিজেও জানে তার চাচা তাকে যতই বকাবকি করুক না কেন তাকে তিনি বেশ ভালবাসেন। সফিকের নিজেরও কেমন লজ্জা লাগছে কারণ কয়েকদিন থেকে ঠিকমত দাঁড়ি কাটা হচ্ছে না।
- কি যা দাঁড়িয়ে আছিস কেন? যা।
- জি চাচাজান।
আজকের দিনটা কেমন অন্যরকম। আজ অনেক কিছু করতে ইচ্ছা করছে সফিকের। বেশ সুখী সুখী মনে হচ্ছে নিজেকে যেন আজ একটা বিশেষ ঘটনা ঘটে গেছে। নিমাইয়ের দোকানে অন্যদিনের মত তেমন ভিড় নেই, কাছে যেতেই নিমাইদা তার পান খাওয়া কাল দাঁত গুলি বের করে বলল,
- কি খবর ভাইজান? আছেন কেমুন? অনেকদিন ধইরা আসেন না।
- এই তো দাদা ভাল আছি বেশ ভাল, আপনার কি অবস্থা?
- গরীবের আবার রাইত দিন চলতাছে কোনমতে। তা ভাইজান আইজ কি কোন ইস্পেসাল প্রোগরাম আছে? ভালা কইরা ফেসটা ওয়াস কইরা দিই?
- বাহ! আপনিতো অনেক ইংরেজি শিখে ফেলেছেন।
- চেষ্টা করতেছি ভাইজান, দুয়া রাইখেন।
- হু
- ভাইজান ঘাড়টা একটু মালিশ কইরা দিমু?
- দাও।
সেলুনের আয়নার দিকে তাকিয়ে সফিকের নিজেরই লজ্জা লাগছে। যদিও সে ফর্সা নয় তারপরেও আজ বেশ ফর্সা লাগছে নিজকে। নিজকে দেখে সে নিজেই বেশ মুগ্ধ। ছোট বেলায় সফিকের এর এক চাচাত বোন প্রায়ই ক্ষেপাত, ‘এই তুই আমাকে বিয়ে করবি? করনা বিয়েটা, আমি তোকে অনেক সুখে রাখব।’ এরকম কথা শুনে সফিক কিছু বলতোনা শুধু লজ্জায় গালটা লাল হয়ে যেত।

বাড়িতে ঢুকতেই চাচা পাঞ্জাবী পাজামা সফিকের হাতে দিয়ে বললেন,
- তাড়াতাড়ি এগুলো পড়ে নে, আজ তোর বিয়ে।
সফিকতো পুরা চমকিত, কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না সে। কোনদিন কল্পনাও করতে পারেনি যে তার বিয়ের ব্যবস্থা চাচা এভাবে করবেন। তার প্রথমবারের মত মনে হল চাচার মত মহৎ মানুষ আর নেই।
- কিরে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? যা, তাড়াতাড়ি।
-ঠিক আছে।

***
রাত ১০টা। সফিক তার ঘরের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আজ তার বাসর রাত। তার বৌয়ের নাম স্বর্ণা। চাচা বলেছেন ‘দেখতে স্বর্ণের মতই সুন্দর।’ সফিক চাচার সকল কথায় অন্ধের মত বিশ্বাস করে। কেন যেন ঘরে ঢুকতে সাহস পাচ্ছে না সফিক। এ ঘর তো তার কাছে নতুন নয়, এ তো তার নিজের ঘর নিজের বিছনা তারপরেও কেমন পর পর মনে হচ্ছে, তার কারণ কি স্বর্ণা ? কি বলবে স্বর্ণার সামনে? কি করবে তার কিছুই সে ঠিক করতে পারছে না । যাহোক বুকে সাহস রেখে শেষ পর্যন্ত দরজা ঠেলে ঘরে ঢুকল। সে তো আবাক! পুরো ঘর আলোকিত করে বসে আছে মেয়েটি এ যেন ঠিক ক্লিয়পেট্রা। সফিক স্তম্ভিত চোখে তার নব বিবাহিতা বৌকে দেখছে। রবীন্দ্রনাথের মত তারও মনে হল “পাইলাম আমি ইহাকে পাইলাম!” সফিক ধীরে ধীরে বিছনার দিকে এগিয়ে যেতে থাকল, মনে হচ্ছে তার বুকের মাঝে কেও যেন হাতুড়ি দিয়ে দ্রিম দ্রিম করে পেটাচ্ছে। অবশেষে সে বসল তার পাশে। আলতো করে স্বর্ণার কোমল হাতটা ধরল সে। শুধু তার মুখ দিয়ে একটি কথায় বের হল, ‘সুখে রাখব তোমায়।’ এ কথা শুনে স্বর্ণা লাজুক মুখে হাসল। হাসলে তার গালে ঢোল পড়ে। সফিক নিশ্চিত এ হাসি লক্ষ কটি টাকার বিনিময়েও কিনতে পাওয়া যাবে না।

***
এখন সফিক আইসিইউ তে। তার বৌ স্বর্ণার সাথে দীর্ঘ একটা সময় কাটিয়ে এসেছে। তার চুলে পাক ধরলেও মনে হচ্ছে সেই রাতের স্বর্ণা ও আজকের স্বর্ণার মধ্যে বিন্দুমাত্র তফাৎ নেই। সফিক বুকের বাম দিকে একটা প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করছে। মনে হচ্ছে ব্যথাটা আস্তে আস্তে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ছে। পালস বিট মনিটরে পালস উঠানামা করছে। সজোরে বিপ দিচ্ছে সেটা। ডাক্তাররা হন্তদন্ত হয়ে ছুটে আসছে তার দিকে। একজন তার বুকে প্রচণ্ড শক্তিতে চাপ দিচ্ছে। সফিক প্রাণপণ চেষ্টা করছে স্বর্ণার সেই হাসিটা মনে করার কিন্তু কিছুতেই মনে পড়ছে না। তার ভীষণ শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। বুকটা মনে হয় ফেটে চৌচির হয়ে যাবে। ডিফিব্রিলেটর দিয়ে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে তার হার্টকে স্বাভাবিক করার প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছে ডাক্তার গণ। পালসের সংখ্যা কমে প্রায় শূন্যের কাছে চলে এসেছে। সফিক এখনও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তার প্রিয়তমার হাসিটি মনে করার। এখন একটু একটু করে মনে পড়তে শুরু করেছে। স্বর্ণার ঠোঁটের নিচে একটা লালচে তিল ছিল হাসলে গালে ঢোল পড়ত। শেষ মুহূর্তে মনে পড়ল সেই হাঁসি মাথা নিচু করে লাজুক ভঙ্গিতে মিস্টি হাসি। এ কি! তার চিন্তা গুলো সব এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে কেন? মিষ্টি মেয়েটাকে খুব দেখতে ইচ্ছা করছে। সে জানে স্বর্ণা তার পাশেই আছে কিন্তু সে শত চেষ্টা করেও চোখ খুলতে পারছে না কেন? সে কি মারা যাচ্ছে!
পালস বিট মনিটরে পালসের সংখ্যা শূন্য, অবিরাম বিপ দিয়ে চলছে সেটা। কয়েকবার ডিফিব্রিলেটর প্রেস করা হল কোন রেসপন্স নাই। এখন শুধু পাশ থেকে স্বর্ণার ফোঁপানোর আওয়াজ আসছে। সফিক যাত্রা করেছে না ফেরার দেশে।
Read More...

বুধবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০১৩

ব্যবহারিকঃইলেকট্রনিক্স; আসুন মজা করে ইলেকট্রনিক্স কাজ শিখি। আরে ইলেকট্রনিক্স এত সহজ! প্রথম পর্ব :) :) :(

Leave a Comment
আমাদের অনেকেরই প্রিয় শখ হল ইলেক্ট্রনিক্স। হাতের কাছে কোন ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র পেলেই অনেকেই খোঁচানো শুরু করি। হয়তো অনেকেই ছোট বেলায় কোন ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র যেমন ডিজিটাল ঘড়ি বা ক্যালকুলেটর কৌতুহল বসত খুলে তা আর ঠিক মত লাগাতে পারিনি। যার ফলে আব্বু আম্মুর কাছে বকুনি খেয়ে হয়েছে। তার পরেও কি কমেছে আমাদের জানার আগ্রহ। আজ আমি আপনাদের সামনে ইলেক্ট্রনিক্স এর বিশাল জগতের মধ্য থেকে সামান্য কিছু তুলে ধরব। প্রথমেই বলে নিই, আমি খুব বেশি জানি না আমি নিজে শিখছি এবং যা শিখছি তা আপনাদের সামনে তুলে ধরছি। আমি চেষ্টা করেছি খুব সহজ ভাষায় বর্ণনা দিতে। কোন প্রকার ভুল ত্রুটি হয়ে গেলে অবশ্যই জানাবেন।
তাহলে শুরু করি...
ইলেক্ট্রনিক নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে গেলে যে নামটি আগে আসে সেটা হল রেজিস্টর। আজ আমি রেজিস্টর ও এর কালার কোড সম্পর্কে আলোচনা করব।

রেজিস্টর
রেজিস্টরঃ রোধক বা রেজিস্টর (Resistor) তড়িৎ বর্তনীতে (Electric Circuit) ব্যবহৃত, দুই প্রান্ত বিশিষ্ট একপ্রকার যন্ত্রাংশ । এর কাজ হল তড়িৎ প্রবাহকে (Electric Current) রোধ করা বা বাধা দেয়া। তড়িৎ বর্তনীতে থাকা অবস্থায় রোধক তার দুই প্রান্তের মধ্যে বিভব পার্থক্য (Potential Difference) সৃষ্টি করার মাধ্যমে প্রবাহকে বাধা দেয়
সহজ কথায় যে ডিভাইস বিদ্যুৎ প্রবাহে বাধা প্রদান করে তাকে রেজিস্টর বলে।
এর একক ওহম (Ω)। একে R দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

রেজিস্টরের প্রকারভেদঃ রেজিস্টর মূলত ৬ প্রকার। যথাঃ
১। ওয়্যার উন্ড টাইপ
২। ভেরিয়েবল টাইপ
৩। কার্বন টাইপ
৪। ফিজিউবল টাইপ
৫। টেম্পারেচার সেনসিটিভ টাইপ
৬। ডিপোজিটেড কার্বন টাইপ।

১। ওয়্যার উন্ড টাইপঃ যে রেজিস্টর ওয়্যার বা তার দ্বারা পেঁচিয়ে তৈরি করা হয় তাকে ওয়্যার উন্ড টাইপ রেজিস্টর বলে।
২। ভেরিয়েবল টাইপঃ যে রেজিস্টরের মান পরিবরতন যোগ্য, অর্থাৎ যে রেজিস্টরের মান পরিবর্তন করা যায় তাকে ভেরিয়েবল টাইপ রেজিস্টর বলে।

৩। কার্বন টাইপঃ যে রেজিস্টর কার্বন দ্বারা তৈরি হয় তাকে কার্বন টাইপ রেজিস্টর বলে।
৪। ফিজিউবল টাইপঃ এই প্রকার রেজিস্টরের ভিতর দিয়ে নির্দিষ্ট পরিমানের চেয়ে বেশি পরিমানে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হলে এটি আপনা আপনি ফিউজড(কেটে) যায়। এই রেজিস্টর এমন ভাবে ডিজাইন করা হয় যেন এটা একটা সার্কিটকে ওভার লোড হতে রক্ষা করে।
৫। টেম্পারেচার সেনসিটিভ টাইপঃ তাপমাত্রা পরিবর্তনের সাথে সাথে যে সকল রেজিস্টরের মান পরিবর্তন হয় তাকে টেম্পারেচার সেনসিটিভ টাইপ রেজিস্টর বলে।
৬। ডিপোজিটেড কার্বন টাইপঃ কাঁচ অথবা সিরামিক জাতীয় পদার্থের উপর কার্বনের বাষ্প জমিয়ে ডিপোজিটেড কার্বন টাইপ রেজিস্টর প্রস্তুত করা হয়।

কালার কোড দ্বারা রেজিস্টরের মান নির্ণয়
কালার কোড দ্বারা খুব সহজেই আমারা মিটার ছাড়ায় যে কোন রেজিস্টরের মান নির্ণয় করতে পারি। এখন প্রশ্ন জাগতে পারে কালার কোড কি? উত্তর হল, প্রতিটা রেজিস্টরের গায়ে বিভিন্ন প্রকার রঙ দ্বারা চিহ্নিত করা থাকে এগুলোকে কালার কোড বলে। কালার কোডের প্রতিটি প্যাচকে ব্যান্ড বলে। রেজিস্টর সাধারনত ৪(চার) ব্যান্ডের বেশি হয়ে থাকে, এছাড়াও ৫ ও ৬ ব্যান্ডের রেজিস্টরও পাওয়া যায়। এখানে সাধারনত ১২ প্রকার কালার ব্যবহার করা হয়। যেগুলো হলঃ কালো, বাদামী, লাল, কমলা, হলুদ, সবুজ, নীল, বেগুনি, ধূষর, সাদা এছাড়াও টলারেন্স এর জন্য সোনালী ও রুপালী কালার ব্যবহার করা হয়। সংক্ষেপে এই কালার গুলোকে বলা হয়ঃ কা, বা, লা, ক, হ, স, নী, বে, ধূ, সা। প্রতিটি বিভিন্ন ব্যান্ডে বিভিন্ন মান রয়েছে তা নিচে একটি চার্টের মাধ্যমে দেখানো হল।
(এই চার্টটাই হইল আসল মাল এইডা বুঝন কম্পুলসারি)

এই চার্টটা আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে। এখন কাজে আসা যাক। কিভাবে আমারা রেজিস্টর মাপব? মনে করি আমার কাছে এই রেজিস্টরটা আছে

সবার আগে আপনাকে রং চিনতে হবে। আপনি নিজে না চিনতে পারলে আপনার ওয়াইফ বা জিফ এর সাহায্য নিন কারণ মেয়েরা কালারের ব্যাপারে ছেলেদের চেয়ে বেশি এক্সপার্ট। উপরের রেজিস্টরটা ৪ কালার ব্যান্ডের একটি রেজিস্টর । অর্থাৎ এখানে ৪ টি কালার আছে। ১ নং ব্যান্ডের রং বাদামী, ২ নং ব্যান্ডের রং কালো, ৩ নং ব্যান্ডের রং লাল ৪ নং ব্যান্ডের রং সোনালী।
তাহলে আমরা এখন হিসাব করি। চার্টের দিকে তাকায়। এখানে দেখি বাদামী রঙের ১ম মান কি আছে? বাদামীর ১ম মান =১, এরপর কালো, এর দ্বিতীয় মান= ০, তারপর লাল, লালের ৩য় মান= ×১০০। মান দেখা শেষ। এবার ক্যালকুলেশন, নিয়ম হল প্রথম ও ২য় মান পরপর বসে যাবে এবং ৩য় মান গুন হিসাবে বসবে অর্থাৎ,
১০×১০০=১০০০ Ω=১KΩ[ যেহেতু ১০০০Ω = ১KΩ।]
সহজ বুদ্ধি হল তিনটা মান সিরিয়ালে বসিয়ে দিবেন। কিছু বুঝলেন? নিশ্চয় বুঝেছেন। না পারলে নিচের চিত্রটি দেখুন। আর ৪র্থ ব্যান্ড ব্যবহার হয় রেজিস্টরের টলারেন্স নির্ণয়ের জন্য। এখানে ৪ নং ব্যান্ডের কালার সোনালী, সোনালীর ৪র্থ মান ±১০%। অর্থাৎ কাজক্ষেত্রে আমারা ১০০০ Ω বা ১KΩ ১০% কম বা বেশি মানের রেজিস্টর ব্যবহার করতে পারব।


আচ্ছা এবার আমরা আর একটা রেজিস্টরের মান নির্ণয় করি।

এখানে প্রথম, ২য় ও ৩য় ব্যান্ডের কালার যথাক্রমে বাদামী, লাল এবং কমলা। চার্ট আনুযায়ী আমারা হিসাব করি। বাদামীর ১ম মান ‘১’ লালের ২য় মান ‘২’ এবং কমলার দ্বিতীয় মান ‘×১০০০’। তাহলে হিসাব নিকাশ দাঁড়ায় ১২×১০০০=১২০০০Ω = ১২KΩ[ যেহেতু ১০০০Ω = ১KΩ।]
৫ ব্যান্ড কালার কোড প্রায় একই রকম। এখানে ১ম, ২য় ও ৩য় মান একত্রে(পাশাপাশি) বসবে ৪র্থ ব্যান্ডের মান গুণিতক হিসাবে বসবে। ৫ম ব্যান্ড রেজিস্টরের টলারেন্স নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয় ।

আচ্ছা একটা ৫ ব্যান্ডের রেজিস্টর দেখি ও এর মান নির্ণয় করি।

উপরে দেখতে পাচ্ছি ১ম ব্যান্ডের রঙ লাল(২), ২য় ব্যান্ডের রঙও লাল (২), ৩য় ব্যান্ডের রঙ কাল (০), ৪র্থ ব্যান্ডের রঙ লাল(গুণিতক ১০০)। তাহলে আমরা হিসাব করে দেখতে পাচ্ছি যে ২২০×১০০ = ২২০০০KΩ এবং ৫ম ব্যান্ডের কালার দ্বারা এর টলারেন্স দেখান হয়েছে।

রেজিস্টর সংযোগ সুত্রঃ রেজিস্টর দুইটি সংযোগ সুত্র মেনে চলে। সুত্র দুটি নিম্নরূপঃ
১. সিরিজ সংযোগঃ
২. প্যারালাল সংযোগঃ

কোন প্রকার ভূল হয়ে গেলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
© আহমেদ সজীব আমান
রিপোস্ট করলাম। কাল রাতে এত কষ্ট করে পোস্টটা দিয়েছিলাম কিন্তু সেটা নির্বাচিত পাতায় যায়নি। কারন ভাল লেখা আমরা পড়ি না।
Read More...

প্রথম শ্রেণী হতে মাধ্যমিক পর্যন্ত পাঠ্য সকল ছড়া ও কবিতার সংকলন। (প্রথম পর্ব)

Leave a Comment
শৈশবে কে না ফিরে যেতে চায়। আসুন শৈশব থেকে একটু ঘুরে আসি। কত মজা করেই না আমরা ছোট বেলা ছড়া পড়তাম। কোথাও বেড়াতে গেলে বা বাড়িতে মেহমান আসলে আম্মু সবসময় বলত ‘একটা ছড়া শোনাও তো’। আমি প্রথম শ্রেণী হতে মাধ্যমিক পর্যন্ত পাঠ্য সকল ছড়া ও কবিতা সংকলন করার একটা ছোট চেষ্টা করেছি। আজ প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর বাংলা বইয়ের সকল ছড়া ও কবিতা তুলে ধরলাম।
প্রথম শ্রেনিঃ

১। হাট্টিমা টিম টিম

হাট্টিমা টিম টিম
তারা মাঠে পারে ডিম।
তাদের খাড়া দুটো শিং
তারা হাট্টিমা টিম টিম

২। আয় রে আয় টিয়ে

আয় রে আয় টিয়ে
নায়ে ভরা দিয়ে
না’ নিয়ে গেল বোয়াল মাছে
তাই না দেখে ভোঁদড় নাচে
ওরে ভোঁদড় ফিরে চা
খোকার নাচন দেখে যা।

৩। আয় আয় চাঁদ মামা

আয় আয় চাঁদ মামা
টিপ দিয়ে যা
চাঁদের কপালে চাঁদ
টিপ দিয়ে যা।
ধান ভানলে কুঁড়ো দেব
মাছ কাটলে মুড়ো দেব
কাল গাইয়ের দুধ দেব
দুধ খাবার বাটি দেব
চাঁদের কপালে চাঁদ
টিপ দিয়ে যা।

৪। ছোটন ঘুমায়
সুফিয়া কামাল

গোল কোরো না গোল কোরো না
ছোটন ঘুমায় খাটে ।
এই ঘুমকে কিনতে হল
নওয়াব বাড়ির হাটে।
সোনা নয় রুপা নয়
দিলাম মোতির মালা
তাই তো ছোটন ঘুমিয়ে আছে
ঘর করে উজালা।

৫। ঝুমকো জবা
ফররুখ আহমদ

ঝুমকো জবা বনের দুল
উঠল ফুটে বনের ফুল।
সবুজ পাতা ঘোমটা খোলে,
ঝুমকো জবা হাওয়ায় দোলে।
সেই দুলুনির তালে তালে,
মন উড়ে যায় ডালে ডালে।

৬। নোটন নোটন পায়রাগুলি

নোটন নোটন পায়রাগুলি
ঝোটন বেঁধেছে,
ওপারেতে ছেলেমেয়ে
নাইতে নেমেছে।
দুই ধারে দুই রুই কাতলা
ভেসে উঠেছে,
কে দেখেছে কে দেখেছে
দাদা দেখেছে।
দাদার হাতে কলম ছিল
ছুড়ে মেরেছে,
উঃ বড্ড লেগেছে।

৭। কানা বগীর ছা
খান মুহম্মদ মঈনুদ্দিন

ঐ দেখা যায় তাল গাছ
ঐ আমাদের গাঁ,
ঐ খানেতে বাস করে
কানা বগীর ছা।
ও বগী তুই খাস কী?
পানতা ভাত চাস কি?
পানতা আমি খাই না
পুঁঠি মাছ পাই না
একটা যদি পাই
অমনি ধরে গাপুস গুপুস খাই।

৮। হনহন পনপন
সুকুমার রায়

চলে হনহন
ছোটে পনপন
ঘোরে বনবন
কাজে ঠনঠন
বায়ু শনশন
শীতে কনকন
কাশি খনখন
ফোঁড়া টনটন
মাছি ভনভন
থালা ঝনঝন।

৯। প্রভাতী
কাজী নজরুল ইসলাম
ভোর হল দোর খোল
খুকুমণি ওঠ রে,
ঐ ডাকে জুঁই-শাখে
ফুল খুকি ছোট রে।
খুলি হাল তুলি পাল
ঐ তরী চলল,
এইবার এইবার
খুকু চোখ খুলল।
আলসে নয় সে
উঠে রোজ সকালে,
রোজ তাই চাঁদা ভাই
টিপ দেয় কপালে।


১০। মামার বাড়ি
জসীমউদ্‌দীন

আয় ছেলেরা, আয় মেয়েরা
ফুল তুলিতে যাই,
ফুলের মালা গলায় দিয়ে
মামার বাড়ি যাই।
ঝড়ের দিনে মামার দেশে
আম কুড়াতে সুখ,
পাকা জামের মধুর রসে
রঙিন করি মুখ।

১১। সংখ্যার ছড়া

১ ২ ৩ ৪
পাঠ করি বারবার।
৫ ৬ ৭ ৮
ঐ দেখা যায় খেলার মাঠ।
৯ ১০ ১১ ১২
তারাতারি কাজ সারো।
১৩ ১৪ ১৫ ১৬
রাত পোহাল ভোর হল।
১৭ ১৮ ১৯ ২০
রেলগাড়ি হিস্ হিস্।
২১ ২২ ২৩ ২৪
কানাকানি ফিসফিস।
২৫ ২৬ ২৭ ২৮
হেঁটে চলে কুমড়োপটাশ।
২৯ ৩০ ৩১ ৩২
মাঠে চরে গরু মহিষ।
৩৩ ৩৪ ৩৫ ৩৬
ঘোড়াশালে ঘোড়ার সহিস।
৩৭ ৩৮ ৩৯ ৪০
তহল দিচ্ছে নগর পুলিশ।
৪১ ৪২ ৪৩ ৪৪
খেতে মজা পদ্মার ইলিশ।
৪৫ ৪৬ ৪৭ ৪৮
শিমুল তুলার কোমল বালিশ।
৪৯ ৫০
মাঠে মাঠে ধানের ছাস।

১২। ছুটি
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

মেঘের কোলে রোদ হেসেছে
বাদল গেছে টুটি,
আজ আমাদের ছুটি ও ভাই,
আজ আমাদের ছুটি।
কী করি আজ ভেবে না পাই
পথ হারিয়ে কন বনে যাই,
কোন মাঠে যে ছুটে বেড়াই
সকল ছেলে জুটি,
আজ আমাদের ছুটি ও ভাই,
আজ আমাদের ছুটি।

দ্বিতীয় শ্রেনিঃ

১। ছড়া
আহসান হাবীব

ঝাঊয়ের শাখায় শন শন শন
মাটিতে লাটিম বন বন বন
বাদলার নদী থৈ থৈ থৈ
মাছের বাজার হৈ হৈ হৈ।

ঢাকিদের ঢাক ডুমডুমাডুম
মেঘে আর মেঘে গুড়ুমগুড়ুম
দুধ কলা ভাত সড়াত সড়াত
আকাশের বাজ চড়াৎ চড়াৎ।

ঘাস বনে সাপ হিস হিস হিস
কানে কানে কথা ফিস ফিস ফিস
কড়কড়ে চটি চটাস চটাস
রেগেমেগে চড় ঠাস ঠাস ঠাস।

খোপের পায়রা বকম বকম
বিয়েমজলিশ গম গম গম
ঘাটের কলসি বুট বুট বুট
আঁধারে ইঁদুর কুট কুট কুট

বেড়ালের ছানা ম্যাও ম্যাও ম্যাও
দু দিনের খুকু ওঁয়াও ওঁয়াও।

২। আমি হব
কাজী নজরুল ইসলাম

আমি হব সকাল বেলার পাখি
সবার আগে কুসুম বাগে
উঠব আমি ডাকি!
সুয্যি মামা জাগার আগে
উঠব আমি জেগে,
হয়নি সকাল, ঘুমো এখন,
মা বলবেন রেগে।
বলব আমি- আলসে মেয়ে
ঘুমিয়ে তুমি থাক,
হয়নি সকাল তাই বলে কি
সকাল হবে না ক?
আমরা যদি না জাগি মা
কেমনে সকাল হবে?
তোমার ছেলে উঠলে গো মা
রাত পোহাবে তবে।

৩। কোন দেশে
সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত

কোন দেশেতে তরুলতা
সকল দেশের চাইতে শ্যামল?
কোন দেশেতে চলতে গেলেই
দলতে হয় রে দূর্বা কোমল?
কোথায় ফলে সোনার ফসল,
সোনার কমল ফোটে রে!
সে আমার বাংলাদেশ,
আমাদেরই বাংলা রে!

কোথায় ডাকে দোয়েল-শ্যামা
ফিঙে নাচে গাছে গাছে?
কোথায় জলে মরাল চলে,
মরালী তার পাছে পাছে;
বাবুই কোথা বাসা বোনে,
চাতক বারি যাচে রে?
সে আমার বাংলাদেশ,
আমাদেরই বাংলা রে!


৪। সবার সুখে
জসীমউদ্‌দীন
সবার সুখে হাসব আমি
কাঁদব সবার দুখে,
নিজের খাবার বিলিয়ে দেব
অনাহারীর মুখে।
আমার বাড়ির ফুল-বাগিচা,
ফুল সকলের হবে,
আমার ঘরে মাটির প্রদিপ
আলোক দিবে সবে।
আমার বাড়ি বাজবে বাঁশি,
সবার বাড়ির সুর,
আমার বাড়ি সবার বাড়ি
রইবে না ক দূর।

৫। কাজের লোক
নবকৄষ্ণ ভট্টাচার্য

মৌমাছি, মৌমাছি
কোথা যাও নাচি নাচি
দাঁড়াও না একবার ভাই।
ঐ ফুল ফোটে বনে
যাই মধু আহরণে
দাঁড়াবার সময় তো নাই।

ছোট পাখ, ছোট পাখি
কিচিমিচি ডাকি ডাকি
কোথা যাও বলে যাও শুনি।
এখন না কব কোথা
আনিয়াছি তৃণলতা
আপনার বাসা আগে বুনি।

পিপীলিকা, পিপীলিকা
দলবল ছাড়ি একা
কোথা যাও, যাও ভাই বলি।
শীতের সঞ্চয় চাই
খাদ্য খুঁজিতেছি তাই
ছয় পায়ে পিল পিল চলি।

৬। আমার পণ
মদনমোহন তর্কালঙ্কার

সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি,
সারা দিন যেন আমি ভালো হয়ে চলি।
আদেশ করেন যাহা মোর গুরুজনে,
আমি যেন সেই কাজ করি ভালো মনে।
ভাইবোন সকলেরে যেন ভালোবাসি,
এক সাথে থাকি যেন সবে মিলিমিশি।
ভালো ছেলেদের সাথে মিশে করি খেলা,
পাঠের সময় যেন নাহি করি হেলা।
সুখি যেন নাহি হই আর কারো দুখে,
মিছে কোথা কভু যেন নাহি আসে মুখে।
সাবধানে যেন লোভ সামলিয়ে থাকি,
কিছুতে কাহারে যেন নাহি দেই ফাঁকি।
ঝগড়া না করি যেন কভু কারো সনে,
সকালে উঠিয়া এই বলি মনে মনে।

৭। ট্রেন
শামসুর রাহমান

ঝক ঝক ঝক ট্রেন চলেছে
রাত দুপুরে অই।
ট্রেন চলেছে, ট্রেন চলেছে
ট্রেনের বাড়ি কই?

একটু জিরোয়, ফের ছুটে যায়
মাঠ পেরুলেই বন।
পুলের উপর বাজনা বাজে
ঝন ঝনাঝন ঝন।

দেশ বিদেশ বেড়ায় ঘুরে
নেইকো ঘোরার সেশ।
ইচ্ছে হলেই বাজায় বাঁশি,
দিন কেটে যায় বেশ।

থামবে হঠাৎ মজার গাড়ি
একটু কেশে খক।
আমায় নিয়ে ছুটবে আবার
ঝক ঝকাঝক ঝক।

৮। আমাদের ছোট নদী
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে,
বৈশাখ মাসে তার হাঁটুজল থাকে।
পার হয়ে যায় গরু, পার হয় গাড়ি,
দুই ধার উঁচু তার, ঢালু তার পাড়ি।

চিকচিক করে বালি, কোথা নাই কাদা,
এক ধারে কাশবন ফুলে ফুলে সাদা।
কিচিমিচি করে সেথা শালিকের ঝাঁক,
রাতে উঠে থেকে থেকে শেয়ালের হাঁক।

তীরে তীরে ছেলেমেয়ে নাহিবার কালে
গামছায় জল ভরি গায়ে তারা ঢালে।
সকালে বিকালে কভু নাওয়া হলে পরে
আঁচলে ছাঁকিয়া তারা ছোট মাছ ধরে।

আষাঢ়ে বাদল নামে, নদী ভরো ভরো,
মাতিয়া ছুটিয়া চলে ধারা খরতর।
দুই কুলে বনে বনে পড়ে যায় সাড়া,
বরষার উৎসবে জেগে উঠে পাড়া।

উৎসর্গঃ উপরের সকল কবিকে।
প্রথম শ্রেণী হতে মাধ্যমিক পর্যন্ত পাঠ্য সকল ছড়া ও কবিতার সংকলন। (দ্বিতীয় পর্ব)

প্রথম শ্রেণী হতে মাধ্যমিক পর্যন্ত পাঠ্য সকল ছড়া ও কবিতার সংকলন। (৩য় পর্ব)
Read More...

শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

আমার পর‌রিত্যক্ত জীবন ...সরকারী চাকুরী আর অসম প্রেম

Leave a Comment
ডিসক্লেইমার : এই গল্পের প্রতিটি ঘটনা ও চরিত্র কাল্পনিক

সরকারী চাকুরী আর বদলী চলে হাত ধরে ধরে...আর তাই বিনা মুল্যে আমার বঙগ দেশ দর্শন ..জন্ম আর পড়শোনা ঢাকায় তাই আমার মধ্যে একটা ঢাকাইয়া ফিল্টার আছে ...মানে ঢাকায় আশার পর মানুষের যে চেন্জ গুলা হয় আর কি ....যাই হোক দক্ষিন বংগ আর পশ্চিম বংগ ঘোরার পর আমার বদলী হয় উত্তরের হিম হিম জেলা গাইবান্ধায় ....ছোট্র ছিম ছাম একটা শহর ...আর আমার অফিস টা শহরে এক সাইডে....অফিসে এসই পরিচয় হয় কবির এর সাথে ..এলাকার ছেলে সে খুব ই স্মার্ট আর কাজে দক্ষ ...যে কোন কাজে ঢাকলে তাকে পা্ওয়া যেত..খুব ই ভাল লাগলো অচেনা একটা জায়গায় তার মত একটা ছেলে পেয়ে ...তাকে নিয়ে ধীরে ধীরে চিনলাম শহরের অলিগলি তুলশি ঘাট...ঢাকা হাইওয়ে তে আমার মটর বাইক নিয়ে উদ্দাম ছুটে চলে ..একিদন বাসের টিকিট আনার জন্য ওকে প্রয়োজন ছিল, মোবাইল টা বন্ধ পেয়ে ..ঠিকানা নিয়ে চলে গেলাম ওর বাসায় ..আমার অফিস এর পাশেই ছিল ও বাসা ..তখন সন্ধা হয়ে এসেছে ...আমি বেল টিপতেই ভাবি মানে ওর মা দরজা খুলে পরিচয় জেনে হাসি মুখে বসতে দিল বলল "কবির বাইরে গেছে এখনি চলে আসবে...নিন্ম মধ্যবিত্ত হলেও ওদের বাসার সব কিছুতে রুচির পারচয় ছিল জানলাম ওরা এক ভাই দুই বোন ...বড় বোন বিয়ে হয়ে গেছে হাসবেন্ড ঢাকায় আর সে স্থানীয় এক এন জি ও তে জব করে ..কিছু ক্ষন পর নাচের পোশাকে একটা মেয়ে ঢুকল আরেকটি ছেলে কে নিয়ে বুঝলাম এই হল কবিরের ছোট বোন..ওর নাম উর্মি ...ভাল নাচে, গান গায় ..আজ ছিল নাচের অনুষ্ঠান ..নাষ্তা হাতে ঢুকতে ঢুকতে কবিরের মা পরিচয় করিয়ে দিল ....আমাকে দেখে উর্মি সালাম দিল ..ক্লাস নাইনে পড়ে উর্মি ..আমি দেখলাম ভবিষ্যতের এক গোলাপ কলি ফোটার অপেক্ষায় মাত্র ....কত ছেলের যে সে ঘুম হারাম করবে ...যাই হোক আমার পরিচয় দিলাম বললাম আমি তোমাদের জেলায় নতুন জয়েন করেছি ...আমি বিবাহিত আমার স্ত্রী ইডেন এর অনার্স পড়ছে হলে থেকে এই সব ই তাকে বললাম ..কিছুক্ষন পড় কবির এলে তাকে নিয়ে বেড় হলাম ....তখন ও বুঝতে পারিনে বা ভাবিনী এই উর্মি আমার জীবন নদীতে কতটা ঝড় তুলবে .....কোথায় কোন বন্দরে আমার অস্থির তরি টি ভীরবে ....সেই এক লোমহর্ষক আরব্য রজনীর মত সাতকাহন .........(চলবে)


হয় পর্ব
সম্পর্কের শুরু টা হয় গান দিয়ে ...আসলে ছাত্র জীবন থেকেই আমি অনেক গান শুনতাম ..ছিলাম সর্বগ্রসী স্রোতা টুকটাক গাইতে্ও পারতাম ..নবীন বরন,স্কুল সমাপনীতে অনেক গান করেছি ...আর উর্মির ও গান ছিল জান ....বাসায় যখন যেতাম গান নিয়ে আলোচনা হত ..খেলতাম অন্ত অক্ষরী ....ও বলত আপনার বয়সী একজন মানুষ গান নিয়ে এত সিরিয়াস ভাবে ভাবা যায় না ....একদিন ও বলেছিল আমি এমন একটা ছেলের সাথে সম্পক করতে চাই যে গান বোঝে .....আসলে ছোট হলেও ও ছিল মনের দিক থেকে অনেক মেচিওর ..ওর চেহারার বৈশিষ্ট ছিল কোমর পর্যন্ত লম্বা চুল,,,খাড়া নাক,,ফর্সা গাল আর সুন্দর মানান সই হাইট.....ছিল স্লিম.....আকর্ষনীয় ফিগার বলতে যা বোঝায় তবে ওকে দেখলে নাক খাড়া পাহাড়ী মেয়ে বলে মনে হত ....তার তুলনায় আমি ছিলাম মোটা ...আর শেমলা গায়ের রং ...তবে ওর উতসাহে মফস্বল শহরে কাজের ব্যসস্ততা তুলনা মুলক কম থাকায় অনেক হাটতাম আর এক্সসার সাইজ করতাম ...আর শীতে কালে বেডমিন্টন ছিল আমার প্রিয় খেলা ......সব চাইতে বড় বিষয় ছিল আমি বিবাহিত ছিলাম .....আমার মনের আবেগ তাই প্রকাশ করার ছিল অনেক দ্বিধা ...
Blo te somewherein blog thaka newa
Read More...

যত খুশি ফ্রি এসএমএস করুন

Leave a Comment
ইন্টারনেট থেকে বিনামূল্যে এসএমএস করার অনেক ওয়েবসাইট আছে কিন্তু www.wadja.com তাদের থেকে একটু ব্যাতিক্রম। এখানে থেকে কোন প্রকারের বাধ্যবাধকতা ছাড়ায় যত খুশি এসএমএস করা যাবে যেকোন অপারেটরে। এছাড়াও এখানে রেজিষ্ট্রেশন করতে কোন মোবাইল নম্বরের প্রয়োজন হয়না। শুধুমাত্র ই-মেইলের ঠিকানাতে আসা লিংকে ক্লিক করে একাউন্ট একটিভ করা যাবে। ১১৭ ক্যারেক্টটারের এসএমএস পাঠানো যাবে এর সাথে আপনার প্রফাইলের ঠিকানাও যাবে। আপনার ইউজার যদি bilash হয় তাহলে প্রফাইলের ঠিকানাও www.wadja.com/mehdiakram হবে। আপনার প্রফাইলে ছবি সহ বিভিন্ন তথ্য দিয়ে রাখতে পারেন।
Read More...

সিগারেটে শূকরের রক্ত! .....এর পরও কি ধুমপান ছাড়বেন না ...একটা ভয়াবহ তথ্য

Leave a Comment
সিগারেটে শূকরের রক্ত!
অস্ট্রেলিয়ার এক প্রফেসরের মন্তব্য।

ইউনিভার্সিটি অব সিডনির প্রফেসর সিমন চ্যাপম্যান বলেছেন, সিগারেটের ফিল্টারে ব্যবহার করা হয় শূকরের রক্ত। নেদারল্যান্ডসের এক গবেষণাকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ওই গবেষণায় দেখা গেছে, ১৮৫টি সিগারেট উৎপাদনকারী কারখানায় ব্যবহার করা হয় শূকর। কারণ সিগারেটের ফিল্টারে রক্তের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিমোগ্লোবিন ব্যবহার করা হয়।

সিমন চ্যাপম্যান আরও বলেছেন, সিগারেট উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো কি কি উপাদান ব্যবহার করছে তা গোপন রাখায় এ বক্তব্যের বিষয়টি নিয়ে বেশি জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলে, এটা তাদের ব্যবসা এবং তারা ব্যবসার গোমর ফাঁক করবে না। তিনি বলেছেন, নেদারল্যান্ডসের ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, শূকরের রক্ত থেকে হিমোগ্লোবিন নিয়ে তা সিগারেটের ফিল্টারে ব্যবহার করা হয়েছে, যাতে ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান তাতে আটকা পড়ে। ফুসফুসে প্রবেশে বাধা পায়। চ্যাপম্যান আরও বলেছেন, গ্রিসের একটি ব্রান্ড-এর সিগারেট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান স্বীকার করেছে শূকরের হিমোগ্লোবিন ব্যবহারের অভিযোগ।
Read More...